পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত এবং জামাতে ইমামের সূরা পড়ার নিয়ম
মুসলিম হিসেবে প্রত্যেক নর নারীর নামায পড়া ফরয। কারন আল্লাহর সান্নিধ্য
লাভের একমাত্র মাধ্যম হল নামায।আর জামাতে সালাত আদায়ের ফযিলত
সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওসাল্লাম বলেছেন, 'জামাতে নামাজ পড়ার ফজিলত একা পড়ার চেয়ে
২৭ গুণ বেশি।' -সহিহ বোখারি ও মুসলিম।
তাই
আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
ইমাম শব্দের আভিধানিক অর্থ:
আরবী ভাষার বিশিষ্ট অভিধান ‘লিসানুল আরবে’
উল্লেখ হয়েছে, ‘মানুষ যার অনুসরণ করে, তাকে ইমাম বলে’।
ইবনু সীদাহ বলেন: প্রধান ব্যক্তি কিংবা মানুষের অনুকরণীয় ব্যক্তিকেই ইমাম বলা হয়। এর বহুবচন হচ্ছে, ‘আইম্মাহ’-ইমামগণ। [লিসানুল আরব, ইবনে মনজুর,১২/২৪]
ফিকাহ বিশ্বকোষে বলা হয়েছে, ইমাম তাকেই
বলা হয় কোন সম্প্রদায় যার অনুসরণ করে। সেই সম্প্রদায় সঠিক পথের অধিকারী হোক অথবা পথ
ভ্রষ্ট হোক হোক।
সঠিক পথের অধিকারী অর্থে আল্লাহ বলেছেন:
“আর তাদের বানিয়েছিলাম ইমাম (নেতা) তারা আমার নির্দেশে মানুষকে সঠিক পথ দেখাত।” [আম্বিয়া/৭৩]
আসুন জেনে নিই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত
এবং জামাতে ইমামের সূরা পড়ার নিয়মঃ
ফজরের নামাজ
ফজরের ২ রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল
ফাজরি,সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তাআলা মুতাও য়াজজিহান্ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি
আল্লাহু আক্বার।)
ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল
ফাজরি,ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।)
বিশেয় দ্রষ্টব্যঃ ইমামতি
করতে-আনা ইমামুল্লিমান হাজারা ও মাইয়্যাফজুরু সহ মুতাওয়াজ্জিহান বলতে হবে আর ইমামের
পিছনে নামাজ পড়তে হলে বলতে হবে(এক্তাদাইতু বিহা-যাল ইমামি মুতা ওয়াজ্জিহান ...)
ইমামের সূরা পড়ার
নিয়মঃ ফজরের ২
রাকাত ফরয নামাজে প্রত্যেক রাকাতে
ইমাম সূরা উচ্চস্বরে পড়বেন।
জোহরের নামাজ
জোহরের নাময মোট ১২ রাকাত। সূর্য মাথার উপর হতে পশ্চিম্
দিকে একটু হেলে পড়লেই জোহরের নামাযের ওয়াক্ত আরম্ভ হয় এবং কোন কিছুর ছায়া দ্বিগুণ
হলে জোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়।
জোহরের ৪ রাকায়াত সুন্নত নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-তাআলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ
জোহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার। )
জোহরের ৪ রাকায়াত ফরজ নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ
জোহরি ফারজুল্লাহি তাআলঅ মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।)
জোহরের ২ রাকায়াত সুন্নত নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকায়াতাই সালাতিজ
জোহরি সুন্নাতি রাসূলিল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার।
জোহরের ২ রাকায়াত নফল নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল
নাফলি মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।)
ইমামের সূরা পড়ার
নিয়মঃ জোহরের ৪ রাকাত ফরয নামাজে ইমাম প্রত্যেক রাকাতে সূরা
নিম্নস্বরে পড়বেন।
আছরের নামাজ
আছরের নামায মোট ৮ রাকাত। কোন লাকড়ির ছায়া দ্বিগুণ হওয়ার পর হতে সূর্যাস্তের
১৫/২০ মিনিট পূর্বে পর্যন্ত আছরের নামাযের সময় থাকে।
আছরের
চার রাকায়াত সুন্নাত নামাযের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইত ুআন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকায়াতি
সালাতিল আছরি সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি
আল্লাহু আকবার।)
আছরের চার রাকায়াত ফরজ নামাযের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইত ুআন্উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকায়াতি সালাতিল
আছরি ফারজুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।)
ইমামের সূরা পড়ার
নিয়মঃ আছরের ৪ রাকাত ফরয
নামাজে ইমাম
প্রত্যেক রাকাতে সূরা নিম্নস্বরে
পড়বেন।
মাগরিবের নামাজ
মাগরিবের নামায মোট ০৭ রাকায়াত। সূর্যাস্তের পর হতে মাগরিবের
নামাযের সময় হয় মাগরিবের ওয়াক্ত অতি অল্পকাল স্থায়ী।
মাগরিবের
৩ রাকায়াত ফরজ নামাযের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা ছালাছা রাকয়াতি
সালাতিল মাগরিব ফারজুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার।)
মাগরিবের ২ রাকায়াত সুন্নাত ফরজ নামাযের নিয়ত
বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকয়াতাই সালাতিল
মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি
আল্লাহু আকবার।)উক্ত দুই রাকায়াত সুন্নত নামায শেষ হলে দুই রাকয়াত নফল নামাজ পড়বেন।
ইমামের সূরা পড়ার
নিয়মঃ মাগরিবের ৩ রাকাত ফরয নামাজে প্রথম ২ রাকাতে ইমাম সূরা উচ্চস্বরে পড়বেন এবং পরের ১ রাকাতে
ইমাম সূরা নিম্নস্বরে পড়বেন।
এশার নামাজ
এশার ৪ রাকায়াত সুন্নত নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি
সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার।)
এশার চার রাকায়াত ফরজ নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইত ুআন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি
ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এশার দুই রাকায়াত সুন্নাত নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকায়াতি সালাতিল
এশায়ি সুন্নাতু রাসুূলিল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার।)
তিন রাকায়াত বেতের নামাজের নিয়ত বাংলায় :
(নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা ছালাছা রাকায়াতি
সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু
আকবার।)
ইমামের সূরা পড়ার
নিয়মঃ এশারের ৪ রাকাত ফরয নামাজে প্রথম
২ রাকাতে ইমাম সূরা উচ্চস্বরে পড়বেন এবং পরের ২ রাকাতে
ইমাম সূরা নিম্নস্বরে পড়বেন।
copyright©S eyeMedia
No comments